Nov 12, 2007

খসড়া

আলাপের মেদুলতায় এবং শীথিলতায়, কিম্বা রিকশার দুলুনিতে
কিম্বা বাতাসে শীস কেটে বেরিয়ে যাওয়া চাহনিতে, চেপে বসা একটা কিছুকে বের করে দেবার তীব্র বাসনা এবং নিজেকে ছুঁড়ে দেওয়া প্রশ্নের বিরামহীন ঘর্ষনে ধূলেল হয়ে পড়ে মন। একটা নদী, একটা নৌকো, ঘাট, দূরে ইস্কুল, পাহাড়ের খাঁজ ধরে পাহাড়ীদের চলা, শুধু পায়ের বুড়ো আংগুল আর পায়ের পাতার সামনেরটুকু দিয়ে তরতর করে কিভাবে পাহাড় বাইতে হয়, কাঁধে বোঝা-বুকে ঝোলানো বাচ্চা নিয়ে, কিভাবে অযুত-নিযুত পাহাড় পাড়ি দিতে হয়, সেটা ওরাই জানে। আমি শুধু স্বপ্নই দেখতে পারি গলা ছেড়ে গান গাইবার, স্বপ্ন এবং জঞ্জালের বাইরে ফুটপাথে দাঁড়ানো শব্দ নিয়ে খেলা করবার।

১২ই নভেম্বর, ২০০৭
কলাম্বিয়া

Oct 27, 2007

মৃতঘোড়ার পিঠ চাবকানো বিষয়ে

মৃত ঘোড়ার পিঠ চাবকে লাভ নেই,
সওয়ারী বিহীন ঘোড়া এখন
দুলকি চালে সম্ভাব্য পরিণতি পেয়েছে।
সহজাত প্রবণতা, সহজাত প্রগলভা
চাবুকের নিষ্ঠুর আতিশয্যে
নির্বাণ লাভ করেছে।
এসো আমরা প্রার্থনা করি
যেন দুম করে আস্তাবল ছেড়ে বের হয়ে না যায়
আমাদের ঘোড়া;
কারণ এই ঘোড়াই আমাদের শরীর ও মনোজগতের শ্লোগান বহন করে
এই ঘোড়ার পিঠে চড়ে আমরা কাব্য করি গদ্য করি
এবং সপ্ত আসমান পাড়ি দেই।
এসো লাগাম টেনে ধরি আমাদের ঘোড়ার
কিছু ঘোড়ার লাগাম ছেড়ে দিলে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নির্গত করে
সেটাকে দুষ্টেরা বলে ঘোড়া দাবানো।

এসো আমাদের ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হই
এবং তীব্র বেগে ছুটে চলি
আরাধ্য মন্দিরে।।

Oct 23, 2007

কবিতা ফিরে আসুক, বারবার


কবিতা লিখবার জন্য সময়ের অভাব কি হয় ?
নিরবিচ্ছিন্ন নিস্তব্দতার অভাব হয়,
টংকারহীন শব্দ, এবং প্রেমময় শব্দের মিলনোন্মাদনার অভাব হয়।

এটা ঠিক বোঝানোর কায়দা জানা নেই,
কিংবা জানাও নেই
কেন শব্দেরা পা টিপে টিপে ভোররাতে চলে যায়
এতটাই কি অপাংক্তেয় হয়ে গেছি
নির্জনতা বিহনে ।


Oct 9, 2007

সম্ভাবনার মৃত্যু


পূর্বরাগ এবং উত্তর রাগের
মধ্যবর্তী
সম্ভাবনার মৃত্যুই,
ছন্দের অভাবে
কবিতা হিসবে গণ্য হয়।।



Aug 23, 2007

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ঃ অসংখ্য ইকারুসের জন্মদাত্রী

কষ্ট হয়, নষ্ট হয়
কষ্টেরা সব নষ্ট হয়
কিছুই থাকেনা প্রভূ
তোমারি বন্দনা করি না কভূ
আপন নিয়তি সরবে ঠুকি তোমার জ্ঞানবৃক্ষে
কিছুই টেকে না প্রভূ
তুমি আমি সকল বন্দনাকারী
সকলি বিলীন হয়
তুমি ও বিলীন হও প্রভূ
বন্দনাকারী বিহনে।

একজন নতমস্তক বন্দনাকারী এবং একজন ইকারুসের মধ্যে নতমস্তক বন্দনাকারী নন্দিত হয় এবং একজন ইকারুস জলপাই রাঙা সূর্যের লালিমায় আপন ভূমে প্রাণ বিসর্জন দেয়।

এবং আমরা ঘেন্না করবার প্রথম স্তবক পাই।

Jul 9, 2007

রিক্সা



রিক্সা নিষিদ্ধ করবার অহর্ণিশ প্রয়াস চলছে,
আমাদের ঢাকা শহরে।
আমাদের প্রিয় ঢাকা শহরে।
বিজ্ঞাপন জর্জরিত পত্রিকাগুলোর খাঁজে খাঁজে গোপন তলোয়ার
হাওলাদারের ভবিষ্যৎনামার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেয়
রিক্সা বিতাড়ন করতে হবে।

শহরের মধ্যবিত্ত রাস্তাগুলোতে
ঠাঠা রোদে
তোমার চিবুকের লবণে,
আমড়া খাওয়ার দিন শেষ হয়ে এলো বলে।


* ২১শে মে, ২০০৭

Jul 8, 2007

ডিজিটাল বনবাস


প্রতিনিয়ত জীবনযাপনের মধ্যদিয়ে, ঘরের দুয়ার খুলে শিশিরবিন্দুই মাঝে মাঝে দেখা হয় না। আজ থেকে বছর তিনেক আগে এরকম ছিলাম না। খুব অনুসন্ধিৎসু চোখ নিয়ে পারিপার্শ্বিক দেখতাম। গতকাল গোধূলীবেলায় বাসায় আসবার সময় আবিষ্কার করলাম বসন্ত এসে গেছে, বাহারী রং আর অনাঘ্রাতা যৌবন নিয়ে। আমার বাসায় ঢুকবার পথের একপাশে পুরোটাই জঙ্গল । রাতে মাঝে মাঝে বিভিন্ন বন্য প্রানী দেখা যায়। এখানে রাস্তায় কার এক্সিডেন্টের মূল কারণ হচ্ছে রাতের বেলা জগিং-এ বেরোনো হরিণ। গাছের দিকে তাকিয়ে খুব অবাক হয়েছি, ঠিক কখন যেন আমার অজান্তে গাছের পাতা ঝকঝকে সবুজ হয়ে গেছে। ফুলের রং হার মানায়, আমার স্বপ্নের পরিধিকেও।

একসময় গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে আমার প্রধান শখ ছিল বড়শী দিয়ে মাছ ধরা, বাম কাঁধের উপর জাল নিয়ে ছুড়ে মারার সেই আনন্দ এখনো অনুভব করি। অথচ এখানে ঘরের পাশের নদীতে গিয়ে একটিবারো মাছ ধরা হলো না। মাঝে মাঝে রাতে নদী ভ্রমণে যাওয়া হয়। ছোট্ট কিন্তু বর্ধনশীল শহরের এই নদীবিহার কতদিন থাকবে কে জানে। রাতের বেলা নদীর পাশে গিয়ে বুঝবার চেষ্টা করি, কোনো তাল-লয় আছে কিনা, স্রোতের। খরস্রোতা নদীর, পাথরে তীব্র আছড়ে পড়ার শব্দে আটকা পড়ি সাময়িক। আবারো বুঝতে পারি, অনেক শিশিরবিন্দুই দেখা হচ্ছে না।

অযথা অকারণ বসে আছি, একটা যন্ত্রের সামনে। যার সাথে আমার যোগাযোগের মাধ্যম বলতে কয়েকটা বর্ণ । এধরণের একটা বোধহীন যন্ত্রের সামনে বসে নির্বোধের মত, সিনথেসাইজড সংগীত শুনে যাচ্ছি। ডেস্কটপে স্মোকি মাঊন্টেনের একটা পূর্ণ বসন্তের ছবি দিয়ে অবদমিত প্রণোদনাকে ডিজিটাল ম্যারিনেড করছি। এরপরেও সংগীতের স্বাদ আহরণ করি, মোঁপাসার 'নেকলেস' এর কথা ভাবি, এরপরে কিভাবে যেন নিজেকে ডিজিটাল মাংকি হওয়া থেকে রক্ষা করি। এই
গানটা শুনছিলাম, আরমীন মুসার গলায়। সিনথেসাইজার ছাড়া মেয়েটার কোন গান শুনতে ইচ্ছে হচ্ছে।


*২৮শে মার্চ, ২০০৭ এ লেখা হয়েছিল। সামহোয়্যারইনব্লগে প্রথম প্রকাশ।

Jul 6, 2007

অপ্রকাশিত স্ফুর্তি



নাক বরাবর থেকে একটু বামে, আয়তাকার লম্বা কাঠের গুড়ির ওপর ভূমি থেকে দেড় ফিট উচ্চতায়, সূর্যকে ঠিক বাম দিকে পঁচাত্তুর ডিগ্রি কোণে রেখে, আমার গতিপথের উল্টো বরাবর, যেন গোটা শহর খিলখিল করছে। ওহে মেদুল কিশোরী, বসফরাস প্রণালীর দক্ষ সাঁতারু ডলফিন, কাটা ঘুড়ির মত গোত্তা খেয়ে ইস্তানবুলের পাকা রাস্তায় হাইড্রোজেন ডাই অক্সাইড তালাশে নেমেছিল জানো কি। আর আমি নিও-ক্ল্যাসিকাল শুভংকর, গাছবাড়িয়া স্কুলের ডিফেন্ডারের কনুই খেয়ে দম আটকে রাখা স্ট্রাইকারের অস্ফুট হাহাকার নিয়ে চার্চের আঙ্গিনায় ঈশ্বরের শাপ-শাপান্ত করেছি মনের সুখে।

Jun 16, 2007

ঘিয়ে ভাজা শন পাপড়ি

মিম্বর পেছনে রেখে নাক বরাবর এসে যেই ঘুরেছি সমকোণে সখী সহযোগে কলকল ছলছল রত ঠিক যেন গাওয়া ঘিয়ে ভাজা শন পাপড়ি কুড়মুড় কুড়মুড় করে আস্তব্যস্ত নেমকহারাম চোখ সমাজের সর্বরন্ধ্রে অঙ্গুলি প্রদর্শন পূর্বক ফ্যালফ্যাল করে গুঁড়ো হয়ে যাওয়া ঝরঝরে তৃপ্তিতে জিরিয়ে জিরিয়ে দমকে দমকে চুমুক দিচ্ছিলো। অতিসাংবিধানিকদের সসতর্ক দৃষ্টিবাদের গুল্লিমেরে বলতে চাই

আকণ্ঠ পানই, সর্বশ্রেষ্ঠ পান

Apr 22, 2007

আজিকার কথা

হাটবারে, হাটে যাই না
ঘাটে পড়ে থাকি এবং রোদ পোহাই।।

কখনো কখনো এটুকুই বলবার থাকে।
কখনো না বলেই সারা।

Apr 16, 2007

পনের ডিগ্রী



ষাট ফিট ব্যাসের একটা বৃত্তের পরিধিতে, কেন্দ্রের সাপেক্ষে পনের ডিগ্রী কৌণিক দূরত্ব বজায় রেখে চলেছি ক্রমাগত। একশো দশ থেকে চব্বিশ ঘন্টার ব্যবধানে পনের'তে নেমে আসা, বিলক্ষণ গঙ্গোত্রীর নিম্ন অববাহিকার মৎসজীবিদের লক্ষণ।


খুরপি সহযোগে,
কাদামাটিতে মাছ খুঁজে বেড়াই

এবং

শাপশাপান্ত করি ব-দ্বীপের।

এক পশলা হাসি মাঝে মাঝেই দেখি
পাশবিক আনন্দ নিয়ে

টাটায়
.
.
.
.

টাটায়

আন্তঃআণবিক বলের মায়া কাটিয়ে
লম্ব বরাবর ছুটে আসলেই
ভেঙ্গে যেত বৃত্ত;



* বাণিজ্য অনুষদ, আরব-ইসরায়েল ফাটাফাটি,
রুমঃ ০০৮
১৩ই এপ্রিল, ২০০৭

বোষ্টমী বলেছে মোরে, যেতে হবে সদানন্দ সাগরে




খরচের খাতায় যাওয়ার শখ

কদাচিৎই হয়,

দেনা কর্জের ফাঁপরে পড়ে

ইলিশ মাছ খাই না,

কিন্তু

তাই বলে যৌবন তো আর দাদনে

চাষ করিনা।।



সবটা শুনে ঘাটের মড়াও বল্লে

হরি হরি মরারে জাগিয়ে, আবার মারবি কেন গো।


এইখানেই কবি এবং কাঁথা-বালিশে তফাৎ

কাঁথা-বালিশ কাজে, আসে এবং সময়ে সময়ে ওম দে।

ওমের কথা আসলে উমদা কথাটাও চলে আসে,

এখনই উমদা সময় বল্লে, ‘জ্ঞানীজন’

খেটে-খুটে পাস মার্ক তুলে ফেলো

আখেরে আখরোট মিলবে।


আখরোট এর আশায় যৌবন জীবনানন্দে সঁপিয়া

তাই এখন একমনে বোষ্টমীর ধ্যান করিতেছি।।


২০০৭-০৪-১৬ ১০:২৪:১১

Apr 14, 2007

নীল জলের পদ্মেরা, কালো ভ্রমরের স্বপ্নেরা



সাদা চশমা

কালো চশমা

...

রোদ চশমা

ছায়া চশমা

...

তুমি হাঁটছ

কথা বলছ

মেঘ করছে

জল নাচছে

...

আমি দেখছি

কথা বলছি

মেঘ ডাকছে

জল করছে

...

তুমি নাচছ

তুমি ডাকছ

চোখ বলছে

কিছু খুঁজছে

...

চোখ ডুকরে

বালি ঠুকরে

রোদ কামড়ে

ছায়া দুমড়ে

...

তুমি কাদাকাদা

আমি থিকথিক

কবিতার গায়ে

মোহ ধিকধিক।।

Apr 12, 2007

সম্ভাবনাময় বিকেল


ঠিক নিশ্চিত নই
কিভাবে সম্বোধন করবো
ডান হাত পিছনে ভাঁজ করে , বাম হাত বাড়িয়ে দেবো
সম্ভ্রান্ত পুরুষের গোপন আহবানে


ঠিক নিশ্চিত নই
তবুও এগিয়ে যাচ্ছি, প্রস্তুতি শুরু করেছি
সদ্য জন্মানো বিকেল থেকে,
হালের বেহাল দশা, পালের তোবড়ানো
বলে দেয়, অনেককাল নীল জল চিরে ছুটিনি
তাই বলে থেমে নেই, আমাদের আশৈশব পৃথিবী
ঠিক মেপে মেপে ঘুরছে, সে হন্তারক অভ্যেসের বশে
একবারও তার মনে হয়নি, আজ এই বিকেলে
হুট করে কি থেমে যাওয়া যায় না। ফালি ফালি রোদের চকচকে অবকাঠামোয়
তরল যে উষ্ণতাটুকু আসছিলো, সেই উষ্ণতার মোহেও তো থামা যায়।

ঠিক নিশ্চিত নই
বিকেল কিভাবে প্রক্রিয়াজাত করতে হয়
জানলে আজ প্যাকেটজাত বিকেলে বাজার সয়লাব করে দিতাম,
বোকা বাক্সের মোহাবিষ্ট কিশোর-কিশোরীদের তালুতে তুলে দিতাম একটা রোদেলা বিকেল।




এত সব অনিশ্চয়তার মাঝে ও পেরিয়ে গেল বেশ কয়েকটা সকাল
একঘেঁয়ে, পানা জলে সাঁতরানো কিছু দুপুর
এবং সম্ভাবনাময় কিছু বিকেল।

ঠিক সেই রকম, সম্ভাবনাময় এক বিকেলে
দুহাতের আঁজলায় মুখচ্ছবি নিয়ে
দুর্বিনীত ভালবাসার ঘোষণা করেছি
।।



৩১শে এপ্রিল, ২০০৭
কলাম্বিয়া।

তুমি কোন পথে যে এলে



তুমি কোন পথে যে এলে, এলে পথিক

আমি দেখি নাই তোমারে

তুমি কোন পথে যে এলে

হঠাৎ স্বপ্‌ন সম দেখা দিলে বনেরই কিনারে

তুমি কোন পথে যে এলে,

ফাগুনে যে বান ডেকেছে, মাটির পাথারে

তোমার সবুজ পালে লাগলো হাওয়া, এলে জোয়ারে

ভেসে এলে জোয়ারে

যৌবনের জোয়ারে

তুমি কোন পথে যে এলে, এলে পথিক

আমি দেখি নাই তোমারে

.

.

.

তোমার মালার গন্ধে তারই আভাস প্রাণে বিহারে

তুমি কোন পথে যে এলে, এলে পথিক

আমি দেখি নাই তোমারে ।।




শাহানা বাযপেয়ি’র গলায় রবি ঠাকুরের ভাষায় প্রার্থনা করছি অবিরত, অনবরত এবং অবচেতন চেতনায়।

কৃতজ্ঞতা জানাই শাহানা’কে।

Mar 26, 2007

তামাদি স্বপ্নেরা যাচ্ছে, সব অন্যদের অধিকারে



মস্তিষ্কের খুপরিতে বাসা বেঁধেছে
চাক ভেঙ্গে বেরিয়ে আসা বিদ্রোহী মৌ এর দল
এদের সরানো বড় সোজা নয়
,
বেশী দিন থাকলে মস্তিষ্কই দাবী করে বসবে তামাদী বলে;
তামাদী করতে নেই কখনো প্রেম তাই,
কারও অধিকারে যাবার আগে উদ্ভাসিত হতে হয় আপন আয়নায় বারবার।


* ছবিটি পোস্ট সিক্রেট থেকে নেওয়া। যেখানে কারিগর এর নাম গোপন থাকে। সাতবার প্রেমে পড়া মানুষ নিশ্চিত ভাবেই ভাগ্যবান এবং দূর্ভাগা; আরোহন এবং অবরোহন দুভাবে দেখলে।

আমার মনের হাউশ


আমার নাটাই কাটা ঘুড়ির পানে

চেয়ে থাকতে থাকতে জলে ভরে যায় ঈশ্বরের চোখ,

কত সুস্বাদু শৈশব ফেলে আজো নিয়ে বসে আছি

পুরোনো জঞ্জাল ।


দেবদূতেরা খাতা কলম ফেলে

সাবান পানির বুদবুদে ছিলিম ছিলিম নেশা করে

আর আমি বসে ঠায়, তোমার কিনারায়

প্রভূ জল কে চল।


তেড়িয়া কিসিমের বালকের চক্ষু

এড়িয়ে ঘোরাঘুরি করতে থাকা ঘাগু রুই

এর ঘিলুতে, সঁপে দিয়ে সভ্যতা

এসো জলকেলী তে মত্ত হই।


অপুর ছুঁড়ে দেওয়া পুঁতির মালাটা

অত্যার্শ্চায জীবনমুখীতায় ঝুলে রইল মাঝ পুকুরে

পানাদের দল সশব্দে বলি উঠে,

ও দূগ্গা বেলা যে হয়ে গেল চারটে খাবি নে।


আমি নোনা জলের মাঝে

কি এক অপরুপ মাছের খোঁজে,

চিৎকারে চিৎকারে খুঁজি নীরব

বন্দর।


১৯ শে জুলাই,২০০৬
ওয়েস্ট কলাম্বিয়া



Mar 12, 2007

রাতের সড়ক


মেঘ মুলুকে ঝাপসা রাতে
স্বপ্ন হাতে, মেজাজ সাতে
সপ্তর্ষীর মিঠে আলোয়
গুল বদনের হাতের চেটোয়
ভালবাসা সঁপে দিও
আলগা শরীর লুটিয়ে দিও।।

Mar 6, 2007

বলা হয়নি এখনো



অনেক কিছুই বলবার ছিল, তবে এখন মনে একটাই কথা ভেসে বেড়াচ্ছে, সেটা হলো '' বেনসননের শূন্য প্যাকেট, আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে'' বলছে '' পারলি না আর একটু রয়েসয়ে টানতে'' অনেককাল পর পেয়েছিলাম দেশি বেনসন।

পক্ষকাল আগে একবার টেনেছিলাম একটা গোল্ডলীফ। কোন এক জগৎশেঠ দেশ হতে এনেছিল এক প্যাকেট, সুযোগ পেয়েছিলাম একটা টানবার। অবশ্য আমি জগৎশেঠের চেয়ে কম যাই নে, আমি একাই টেনেছি বেনসন।

কখনোই সচেতন অনুরক্ততায় বলিনি ভালবাসি
তীব্র এক প্রশ্ন নিয়ে
করে গেছি অবিরত চুম্বন
বুক পকেট কিম্বা উরুসন্ধির তীব্র উষ্ণতা আর কজনা পায় বলো;
কিন্তু দেখো আজো বলিনি ভালোবাসি
রন্ধ্রে রন্ধ্রে তোমার গমন
হেথা সেথা যেথা কভূ ঈশ্বর করেননি পদার্পণ
তবুও আজো তোমায় বলিনি ভালোবাসি
প্রতিটি অনাগত বসন্ত কিংবা অনাঘ্রাতা নারীর কসম
প্রতিটি ঋতুতে অসামান্য আবেদন ছিলো তোমার
অথচ আজো বলা হলো না ভালবাসি
।।



২'রা মার্চ, ২০০৭

Feb 18, 2007

ফিউশন



একবার সাহস করে বেরিয়ে যাও,
একবার সাহস দেখাও, জুতোর বাইরে পা রাখবার
একবার শুধু কানাগলির বাইরে এসো
একবার সূর্যের মুখোমুখি দাঁড়াও।

প্রমিথিউস এবং আগুনের সেই চিরায়ত মিথে অসংখ্য সম্ভাবনা আছে। প্রমিথিউস আগুন আনেনি, সে শুধু মানুষের ভেতরকার আগুনের সম্ভাবনা চোখের সামনে তুলে ধরেছিল। দেবদূত’দের জিম্মায় নিজেদের আগুন রাখতে নেই।
আগুন জ্বালাবার জন্য, পোড়াবার জন্য এবং ছারখার করবার জন্য।

গতকাল প্রমিথিউসের সন্ধানে ডুব দিয়েছিলাম
সশান্ত সাগরে দীর্ঘকায় সাপদের সভার মাঝে
লকলকে জিভ দেখেছি ; জেনেছি
কৌটোর ভেতর থাকা আর নিরাপদ নয়
কৌটো সহ বিকিকিনি হচ্ছে, আজকাল
অ্যান্ড্রোমিডাও আজকাল নিরাপদ নয়, সেখানেও হাওয়ারা প্রবেশ করেছে
ফিউশন প্রক্রিয়ার সমাপ্তি হয়েছে নক্ষত্রমণ্ডলিতে
চলছে গোপন আগ্রাসনের প্রস্তুতি
ভাষা, সংস্কৃতি , ধর্ম সব প্রি-পারচেজ অর্ডার চলছে।
যেভাবে চাও পাবে এখন ঈশ্বর’কে
সাদা, কালো , বাদামী কিংবা সবুজ
ঈশ্বর এখন সর্বব্যাপী, সর্বগামী ; ঈশ্বর চাইলে এখন হ্রস্ব-ই দিয়েও লিখতে পারো
আজকাল কাস্টোমাইজড ঈশ্বর’দের দেদার চাহিদা।
গোল্ডেন, সিলভার, ব্রাস এমন কি ডায়মন্ড কোটেড ঈশ্বরও আজকাল মার্কেটে উঠছে
খালি জুতোর বাইরে একবার পা দাও, নৌকো ছেড়ে একবার জলের স্পর্শ নাও
দেখবে সাপদের বিষ সব নির্বিষ হয়ে গেছে, কবিদের প্রয়াণে
নখ-দন্ত হারানো বাঘ নির্নিমেষ চেয়ে থাকে চিড়িয়াখানার বুভুক্ষু দর্শকের দিকে
আমাদের আগুন এখন আর তপ্ত করে না, রুটি কিংবা বিছানা কোনোটাই
ক্ষিধেরা সব আবাস করেছে , বরফ যুগে
ক্ষুধা এখন নিজেকে গ্রাস করবার, গাংচিলের ডানার নীচের ওম গ্রাস করবার
ঊষ্ণ রক্তের লালিমা গ্রাস করবার।

১৮’ই ফেব্রুয়ারী, ২০০৭
১০:৪৪
ওয়েস্ট কলাম্বিয়া।

Feb 16, 2007

আমি ও হতে চাই একজন তত্ত্বাবধানকারী


খবরের পাতায় বাবা-মায়ের সাথে সেরা ছাত্রের চর্বিত-চর্বনটি
এখন বলে, 'তত্ত্বাবধায়কÿ হওয়াই আমার লক্ষ্য'
সবাই তত্ত্বাবধায়ক হতে চায়
আমিও গিয়েছিলাম প্রেমিকার বাড়ি
আমার গন্ত্যেব্যর শেষে, 'তত্ত্বাবধান ' ছিলো না বলে
রাস্তা মাপার রুলার ধরিয়ে বিদেয় করেছেন ঝেঁটিয়ে
আমি হতে চাই তত্ত্বাবধানকারীদের একজন
কলার উঁচা করে, আমিও হাঁটতে চাই
জাতীয় সংসদে

শুনেছি বড় বড় আনকোড়া বিল্ডিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
সুলভে দিচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক হবার রোডম্যাপ
সরকারী ভাবে ঘোষিত হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক নীতিমালা
আমি হতে চাই একজন তত্ত্বাবধানকারী
বিবিকে বলেছিলাম, ' তোমায় রক্ষা করবো প্রাণের বিনিময়ে '
প্রাণটি ভিক্ষা দিয়ে করূনা করেছে বিবি আমার
বলেছে, 'যদি পারো হতে তত্ত্বাবধানকারী আমার, তবেই এসো সোহাগ দেখাতে '
আমি হতে চাই তাদের একজন

শুনলাম ঈশ্বর নতুন পয়গাম পাঠিয়েছেন
অধিকর্তা হতে রোচে না তার আর
এসেছে আসমানী সংশোধনী
আমিও বলে উঠি
'
হে মহান তত্ত্বাবধানকারী, তুমিই সর্বশক্তিমান, তোমা হইতে বড় কোন তত্ত্বাবধানকারী নাই '

আমিও হতে চাই একজন মহান তত্ত্বাবধায়ক
আমিও হতে চাই তাদের একজন ।।

**
ঘুম আসছে, আর ভাল্লাগতাছেনা ।পরে একটা তত্ত্বাবধায়ক কাব্যের সাইজ দিমু এইটারে

Feb 4, 2007

আকাশের নীল


আজ আকাশের রং নীল ছিল
আমার মন ছিল বেগুনী
তিরতির করে কলজে কাঁপছিল
শোঁ শোঁ রে অলিন্দে হাওয়া বইছিল
ভুশ ভুশ করে উঁকি মারছিল শিমূল-বটের মূল
ঝরো ঝরো এই পাঁজরের খাঁচা ঠুকছিল বুলবুল
ধোঁয়া রুপ এই মৃত্যু মিছিল
ফিসফিস করে বায়
ফুসফুস আজি ক্লান্ত মোর অবিরাম ভালোবাসায়

এক দেশে ছিল এক, আকাশ এবং সাগরের নীলরং আসক্ত যুবক শুধুমাত্র আকাশের নীল দেখবার জন্যই যে বেঁচে থাকতে পারে সাগরের কল্লোল শুনবার জন্য যে সব শব্দের মৃত্যু কামনা করতে পারে আমি এখন তার কথা বলছি

আমি আমার কথা বলছি, যার পূর্ব পুরুষ আকাশ এবং মাটির সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন আমি ভীষণ আনন্দিত হই , ভীষণ কৃতজ্ঞবোধ করি বেঁচে আছি বলে, ভীষণ অভিভূত হই আমার দুটো চোখ আছে বলে, এই সবই অনুভব করি যখন আকাশের নীল দেখি



* ছবির স্বত্ত কার জানিনা, যারই হোক কৃতজ্ঞতা।

Jan 6, 2007

একটি প্লেটনিক চুমুর স্ক্রিপ্ট

একটু ডাইনে

হ্যাঁ

নাক বরাবর

নীচের ঠোঁটের ঠিক নীচেই থাকবে নীচের ঠোঁট

হ্যাঁ

ওভাবে নয়, ওটা অশ্লীল ছবির নায়িকারা করে

উপবৃত্তাকার অবস্থান থেকে ধীরে ধীরে

পার্শ্বচাপের কারণে গোলাকার হবে

এবার ঠিক আছে

উহু জিহ্ববা না

ওটা শয়তানের প্রতীক

লালসা তৈরি হয় ওতে,

এবার ঠিক আছে,

ধুত্তোরি ছাই

স্পিড ব্রেকার,

প্লেটনিক চুমু কে

টেকটোনিক সংঘর্ষে

রুপ দিলে।।

ইঊটোপিয়া



ইশশ কতো আহলাদ
যাও দূরে সরে বসো
এই আউটার সার্কুলার রোডে
মেজ খালা থাকে
দেখলে
ইনার সার্কুলারে কাকু থাকে
সেন্টারে কে থাকে ? ঐ রিকশাওয়ালা
এনেক্সে রীতা আপু
কলা ভবনে কোন এক খালু
আমার কপালে কোন অপ্সরা জুটেছে শুনি
ঐ রিকশাওয়ালাকে দেখলে
মেজ খালা রাগ করে না
প্রতিদিন কাঁধে ভ্যানিটি ব্যাগ নাও
‘ভ্যানিটি ব্যাগের সাথে কিছু চলছে না তো ,
বলে ওঠে না কেউ
আমি থাকলেই
যত নরক গুলজার।।